৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি

 ৫ আগস্ট হাসিনার কয়েক হাজার কল রেকর্ড মুছে ফেলে এনটিএমসি




জুলাই বিপ্লবের শেষ মুহূর্তে শেখ হাসিনা পলায়নের পর তার কয়েক হাজার কল রেকর্ড ও বিভিন্ন ধরনের ফুটেজ মুছে ফেলে জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)। শেখ হাসিনার চারটি মোবাইল ফোন নম্বর থেকে এসব কলের রেকর্ড নেওয়া হয়। পরে এনটিএমসির মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের নির্দেশে হাসিনার এসব কল রেকর্ড মুছে ফেলা হয়। এমনকি সে ফোনগুলোর মালিকানার তথ্যও মুছে ফেলেন শেখ হাসিনার অনুগতরা।


আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা জানান, জিয়াউল আহসানের নির্দেশের ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় এনটিএমসি সদস্যরা নিজেদের জিম্মায় নিয়ে রেকর্ডগুলো মুছে ফেলে। তবে আইটি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে এগুলো উদ্ধার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।



তানভীর হাসান জোহা জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) স্পর্শকাতর তার বার্তাগুলো এনটিএমসি সদস্যরা নিয়ে যান। এসব কল রেকর্ড মুছে ফেলার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু ঊর্ধ্বতন সদস্য জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে। এসব আলামত উদ্ধার করা গেলে শেখ হাসিনার সঙ্গে অনেকের যোগসূত্র বের হয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



এদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা আলমগীর গতকাল সোমবার ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে জানান, জুলাই গণআন্দোলন দমনে শেখ হাসিনার নির্দেশে তিন লাখ রাউন্ডের বেশি গুলি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই পুলিশ ব্যবহার করে প্রায় এক লাখ রাউন্ড গুলি। তিনি বলেন, তদন্তকালে বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে পাওয়া এক চিঠির মাধ্যমে জুলাই আন্দোলন দমনে ছাত্র-জনতার ওপর ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলিসংক্রান্ত ২২৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন পাই। যাতে দেখা যায় এলএমজি, এসএমজি, চাইনিজ রাইফেল, শটগান, রিভলবার, পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহার করে শুধু ঢাকা শহরে ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড এবং সারা দেশে তিন লাখ পাঁচ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি ব্যবহার করা হয় ।



গতকাল শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতারিরোধী অপরাধের মামলায় ৫৪তম এবং শেষ সাক্ষী হিসেবে এ জবানবন্দি দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর। জবানবন্দির শুরুতে গতকালও জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কয়েকটি ভিডিও আইসিটিতে প্রদর্শন করা হয়।


এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১-এ জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনার নানা ধরনের কটূক্তি সংবলিত পেপার কাটিং জব্দ তালিকা হিসেবে প্রদর্শন করা হয়। এর মধ্যে গত বছরের ১৪ জুলাই আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি আখ্যায়িত করা শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের নিউজ অন্যতম। এছাড়া দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন সময়ের ৫৪টি প্রতিবেদন মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে উপস্থাপন করে তদন্তকারী কর্মকর্তা।


আরও পড়ুনঃ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ট্রাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, ফারুক আহাম্মদ, তানভীর হাসান জোহাসহ অন্যরা ।


এর আগে বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৬৯টি অডিও ক্লিপ ও তিনটি মোবাইল ফোন নম্বরের সিডিআর বা কল ডিটেইল রেকর্ড জব্দ করার কথা জানান।


আপনার মতামত লিখুনঃ



Countdown Timer
00:01

Comments

Popular posts from this blog

রিয়া মনিকে কুপিয়ে হত্যা

মায়ের পরকীয়ার ‘শাস্তি’ দিতে একাধিকবার ধর্ষণ, বেধড়ক মারধর করলেন পুত্র!

মায়ের পরকীয়ার ‘শাস্তি’ দিতে একাধিকবার ধর্ষণ, বেধড়ক মারধর করলেন পুত্র!